কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ায় কাল থেকে শুরু হচ্ছে তিনদিন ব্যাপী লালন স্মরণোৎসব
হিসনা বাণী প্রতিবেদক।।১৬ অক্টোবর, ২৩ইং।।
কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়া আঁখড়া বাড়ীতে মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১৩৩ তম তিন দিন ব্যাপী তিরোধান দিবস। মাজার প্রাঙ্গনে এসেছে ভক্ত সাধু, লালন অনুসারী, আর দর্শনার্থীরা। ১৭ অক্টোবর থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত তিনদিন ব্যাপী উৎসবকে কেন্দ্র করে লালন আঁখড়াবাড়িতে ইতিমধ্যেই সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। মাজারকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। শেষ হয়েছে মাজার প্রাঙ্গন ধোয়া-মোছার কাজও। ভেতরে বসেছে বাউল ফকিরদের আসর আর কালি নদীর পাড়ে বসেছে বিশাল মেলা ও লালন মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে আলোচনা সভার এবং রাতভর লালন গানের জন্য। লালনের মানবতাবাদ ও অসাম্প্রদায়িকতা সামগ্রিকভাবে প্রেরণা জুগিয়েছে ভক্তদের মাঝে। পাশাপাশি আধ্যাত্ম-সাধনার নিগুড় পদ্ধতি গুরু-শিষ্যদের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে তাঁর গানের মাধ্যমে। তিনদিনের আয়োজনে এমন কথা ও অজানা তথ্য যেন জানতে পারে ভক্তরা। এই তিন দিন কালী নদীর পাড়ে উন্মুক্ত মঞ্চে লালনের জীবন দর্শন নিয়ে হবে আলোচনা ও লালন সংঙ্গীত। কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়া লালন আঁখড়াবাড়িতে ২ টি অনুষ্ঠানে সাধু ভক্ত এবং অনুসারিদের সমাগম ঘটে। এর একটি পহেলা কার্ত্তিক লালন তিরোধান দিবস আর অপরটি ফাল্গুন মাসের দোল পূর্নিমার দিন দোলৎসব। এই অনুষ্ঠান দুটি ঘিরে আঁখড়াবাড়িতে আয়োজন করা হয় সাধুসঙ্গ। কোন সাধক ফকিরকে আমন্ত্রন জানানোর প্রয়োজন হয়না অনুষ্ঠানের জন্য। উৎসব দুটির কয়েকদিন আগেই দেশ বিদেশ থেকে সাধু ভক্তরা চলে আসেন উৎসব অঙ্গনে। এবারও তার ব্যাত্যায় ঘটেনি ছুটে আসছেন সাধু ভক্তরা ও অনুসারীরা। এই সাধুসঙ্গ ঘিরে সাঁইজির অনুসারিদের মনে বইছে স্বর্গীয় আনন্দ। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সহযোগীতায় ও লালন একাডেমীর আয়োজনে উৎসব সম্পন্ন করতে সকল প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। মেলাকে কেন্দ্র করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত দোকানীরা পসরা সাজাতে এখন দিন-রাত কাজ করছে কালী নদীর বিস্তীর্ণ জায়গা জুড়ে। ভক্তবৃন্দসহ জনসাধারনের নিরাপত্তা এবং অনুষ্ঠানটি শান্তিপূর্ন ও নির্বিঘ্ন করার জন্য জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন যৌথ ভাবে ব্যবস্থা গ্রহন করেছে।অনুষ্ঠানের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে যৌথ ভাবে পুলিশ এবং র্যাব-১২ কুষ্টিয়াকে।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা বলেন, লালন তিরোধান দিবস ও গ্রামীণ মেলাকে প্রাণবন্ত করার জন্য সবরকম ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা সেখানে দায়িত্ব পালন করবেন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিৎ করার জন্য।কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার এ এইচ এম আব্দুর রকিব, বিপিএম, পিপিএম (বার) বলেন অনুষ্ঠান ঘিরে মাজার প্রাঙ্গণ ও তার আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুরো মাজার এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত।