কুষ্টিয়ায় ফকির লালন শাহ এর ১৩৩ তম তিরোধান দিবসের উদ্বোধন করলেন হানিফ এমপি
হিসনা বাণী প্রতিবেদক।।১৮ অক্টোবর, ২৩ইং।।
মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি, কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ায় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ এঁর ১৩৩তম তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসন, কুষ্টিয়ার সহযোগিতায় লালন একাডেমির আয়োজনে ১৭ অক্টোবর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ৩ দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর ৩ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ। কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন , কুষ্টিয়া ১ দৌলতপুর আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য আ. কা. ম. সরোয়ার জাহান বাদশা, কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার এ এইচ এম আব্দুর রকিব, বিপিএম, পিপিএম (বার), কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সভপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজগর আলী, কুষ্টিয়া জর্জ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী, কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি তাইজাল আলী খান,কুষ্টিয়া নাগরিক কমিটির সভাপতি ডাঃ এস এম মোস্তানজিদ লোটাস,কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসির সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব।
প্রধান আলোচক ছিলেন ইবির সাবেক উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মন্ডল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, চাপড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হক মনজু। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, লালন শাহ ছিলেন মানবতাবাদী, সুফি সাধক। তিনি অসাধারণ, অসাম্প্রদায়িক মানুষ ছিলেন।যার মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তেমন ছিলো না কিন্তু তার চিন্তা, চেতনা ও উন্নত দর্শন ছিলো মানবের জন্য, সমাজের জন্য এবং দেশের জন্য। আসলে লালন সবসময় মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখেছেন। মানবতার কথা বলেছেন। কেউ আদর্শ মানুষ হওয়ার জন্য কথা বলে না, চিন্তা করে না। কিন্তু লালন সেই আদর্শবান মানুষ হওয়ার কথা বলেছেন। মানুষ মানুষের জন্য সেটি তার চিন্তা, দর্শনে প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি বলেন,
অসাম্পদায়িক চেতনা নিয়ে আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। যে অসাম্প্রদায়িক দেশের জন্য ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছে, দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি হয়েছে, যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু। এতো ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত সেই বাংলাদেশে আজ সাম্প্রদায়িক ছোবল হানছে। এই সমাজকে নিয়ে সাম্প্রদায়িকতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে একাত্তরে ধর্মের নামে গণহত্যা চালানো সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। আজ স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ও তাদের দোসররা আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।তিনি বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনার সমাজ গড়ার জন্য লড়াই করে দেশ স্বাধীন করেছি। সেই বাংলাদেশ আজ কোথায় চলে যাচ্ছে। প্রতিবছর আমরা একটা করে অনুষ্ঠান করি।
এখানে অনেক কথা বলি, তার দর্শন, তত্ত্ব, চিন্তা-চেতনার কথা বলি। সেই চেতনার বাস্তবায়ন কোথায়। লালন ভক্তদের মাধ্যমে এই চেতনা সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ুক। আমরা চাই লালনের দর্শনে সেই চেতনার মানুষ গড়ে উঠুক। লালনের দর্শন অনুযায়ী আমরা মানবতাবাদী, অসাম্প্রদায়িক মানুষ হবো। যারা লালনে বিশ্বাসী, যারা ধর্ম, জাতের মধ্যে নয় সাম্প্রদায়িকতার উর্ধ্বে উঠে আমরা লালনের দর্শন নিয়ে এগিয়ে যেতে পারি এটাই হোক আমাদের কাম্য।আলোচনা শেষে লালন একাডেমির শিল্পীরা লালন সঙ্গীত পরিবেশন করেন।