বাসে-ট্রেনে আগুন দিয়ে, চোরাগোপ্তা হামলা করে নির্বাচন বানচাল করা যাবে নাঃ হানিফ
ঢাকা অফিস ।।২২ নভেম্বর, ২৩ ইং।। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি বলেছেন,
বাসে-ট্রেনে আগুন দিয়ে, চোরাগোপ্তা হামলা করে দেশের রাষ্ট্রীয় কাজ থামানো যাবে না, এগুলো কোনো রাজনৈতিক কর্মর্সূচি নয়; এটা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। তারা ভেবেছে বাসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে সম্পত্তি ধ্বংস করে বোধহয় নির্বাচন বানচাল করা যাবে। নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী উৎসবমুখর পরিবেশে হবে। নির্বাচন বানচাল করা যাবে না।
২১ নভেম্বর, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জেল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘হরতাল-অবরোধ আর আগুন সন্ত্রাস: বন্ধ হোক এই অপরাজনীতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভার যৌথ আয়োজন করে গৌরব’৭১ ও স্বাধীনতা সাংবাদিক ফোরাম।
বিএনপি জঙ্গি দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বিএনপির সাথে আছে আরেকটি দল জামায়াত। এদেরকে আমি কখনো রাজনৈতিক দল মনে করি না। ধর্মভিত্তিক জঙ্গি দল জামায়াতে ইসলামী। এরা একাত্তরে তাদের জঙ্গিপনা দেখিয়েছিল হত্যা, খুন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে। তাদের এই ধারা অব্যাহত আছে। এদের সাথে বিএনপি এখন জঙ্গি দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি বলেন, পেট্রোল দিয়ে বাসে-ট্রেনে আগুন দেয়া, মানুষকে আহত করা এগুলো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। এই কর্মকাণ্ডের সাথে যারা জড়িত তাদেরকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করে বিচার করা হবে। তাদের কি রাজনৈতিক সিল আছে, সেটা দেখা হবে না। যারা আগুন দেয় তারা সন্ত্রাসী। এদেরকে সন্ত্রাসী হিসেবেই বিবেচিত করা হবে।
হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধশীল। যার কারণে এই সমস্ত সন্ত্রাসীদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দমন করুক সেটা আমরা চাই। এর চেয়ে বেশিমাত্রায় তারা যদি বাড়াবাড়ি করে আওয়ামী লীগও জানে কিভাবে সন্ত্রাসীদের রাজপথে শায়েস্তা করতে হয়।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন, সংগ্রাম করার পর দেশ স্বাধীন হয়েছে। কারো দয়ায় বা গোলটেবিলে আলোচনায় বসে স্বাধীনতা আসেনি। ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক উন্নত রাষ্ট্র হবে। আজ বঙ্গবন্ধু নেই কিন্তু তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণে চরম দরিদ্র দেশ আজ বিশ্বের বুকে উন্নয়শীল রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত। ২০৩১ সালের মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবো এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নের সোনার বাংলা হবে সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হয়, একদিকে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি হচ্ছে অন্যদিকে মানুষের মধ্যে বিশেষ করে রাজনৈতিক অঙ্গনে নীতি-নৈতিকতা, মানবিক অবক্ষয়ের চরম বহিঃপ্রকাশ আমরা দেখতে পাচ্ছি।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি মানিক লাল ঘোষ।
আলোচনা সভার শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন গৌরব ’৭১-এর সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীন। সঞ্চালনা করেন স্বাধীনতা সাংবাদিক ফোরাম নেতা ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আলম। প্রধান অতিথি মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি আরও বলেন, আমরাও আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। বিএনপির সাথে কিছু সমমনা দল আন্দোলন করে বলছে তারা গণতন্ত্র কায়েম করতে চায়। কোন গণতন্ত্র আপনারা কায়েম করতে চান? মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা, আগুন দিয়ে মানুষের সম্পত্তি ধ্বংস করা, এর নাম কি গণতন্ত্র? আপনারা কোন গণতন্ত্র কায়েম করতে চান?
আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, বিএনপির নেতারা প্রতিদিন কথা বলেন, সভা-সমাবেশ করেন তারপরও বলেন দেশে গণতন্ত্র নাই। কথা বলার অধিকার নাই। তারা এরকম নির্লজ্জ মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। ২৮ অক্টোবরের পর থেকে তারা রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে ১৮৬টি বাস-ট্রাক আগুন পুড়িয়েছে। কেন? রাজনীতির সাথে আগুনের সম্পর্ক কী? এটা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। এগুলো জঙ্গি বা সন্ত্রাসীদের কাজ, এটা কিভাবে গণতন্ত্র হয়। আপনারা গণতন্ত্রের কথা বলেন, মানবতার কথা বলেন, অন্যদিকে আগুন দিয়ে নিরীহ মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেন, এটা কোন গণতন্ত্র, কোন মানবতা?