ভেড়ামারায় গরুর লাম্পি স্কিন রোগ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা
হিসনা বাণী প্রতিবেদক।।কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় দেখা দিয়েছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ (এলএসডি)। গত এক মাসে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে অন্তত ৫ টি গরু মারা গেছে। গরুর অসুস্থতা নিয়ে চিন্তিত কৃষক।
ভেড়ামারা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানাগেছে, ২০১৭ সাল থেকে এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।
গরুর লাম্পি স্কিন ভাইরাসজনিত রোগ। তবে এ রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন। এই রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরে প্রথমে জ্বর দেখা দেয় এবং খাবারের রুচি কমে যায়। জ্বর বেশি হলে নাক-মুখ দিয়ে লালা বের হয়, পা ফুলে যায়। আক্রান্ত গরুর বুকের নিচে দুই পায়ের মাঝে পানি জমে।
গরুর শরীরের বিভিন্ন স্থানে চামড়ার নিচে অসংখ্য গুটি হয়। পরে ক্ষত হয়ে পচন ধরে। সেই সঙ্গে চামড়া থেকে লোম উঠে যায়।
লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ ও তরল খাবার খাওয়াতে হয়। সাধারণত এই রোগে গরুর মৃত্যুঝুঁকি কম। বছরে একবার ভ্যাকসিন নিলে রোগ প্রতিরোধ সম্ভব। যদিও প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম আসে।
চাষিদের সচেতন করতে উঠান বৈঠক করাসহ ভ্যাক্সিনেটরদের মাধ্যমে খামারি ও কৃষকদের মাঝে ক্যাম্পিং করে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়াও গরুর সঠিক পরিচর্যা, আক্রান্ত পশুকে মশারির ভেতর রাখা ও বাসস্থান পরিষ্কারপরিছন্ন রাখার মাধ্যমে এ রোগ ছড়িয়ে পড়া রোধ করা সম্ভব।
এদিকে উপজেলার জুনিয়াদহ, চাঁদগ্রাম, মোকারিমপুর ইউনিয়ন ও পৌরসভায় লাম্পি স্কিন ডিজিস রোগে আক্রান্ত গরুর দেখা পাওয়া গেছে। এ রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।
শহরের ফারাকপুর এলাকার কৃষক হাফিজুল ইসলামের একটি গরু,
মাহবুল ও মুকুলের ৪ টি, ক্যানালপাড়ার খুদু মন্ডলের ২ টি গরু জুনিয়াদহ ইউনিয়নের জুনিয়াদহ গ্রামের তৌহিদুল ইসলামের ২ টি গরুসহ এমন আরও অনেক কৃষকের গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
এর মধ্যে চারটি গরু মারা গেছে।
হাফিজুল ইসলাম বলেন, আমার চারটি গাভী গরু রয়েছে। এর মধ্যে একটি বাছুর লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। শরীরের চামড়ার বিভিন্ন জায়গায় গুটি হয়েছে। ঠিকমতো খাবার খাচ্ছে না। ঠিকমতো ঘাস খায় না। কয়েক দিনেই গরু রোগা হয়ে গেছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোছা. কানিজ ফারজানা বলেন, ‘লাম্পি স্কিন প্রতিরোধ যোগ্য রোগ। এ রোগ প্রতিরোধে বছরে একবার ভ্যাকসিন নিতে হয়।
আমরা মাঠ পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। এ বিষয়টি নিয়ে সামনেই একটি বড় ক্যাম্পিনিং রয়েছে ।
ভ্যাকসিনের বিষয়ে তিনি বলেন,
অফিসে সরকারি ভাবে চাহিদার তুলনায় কম ভ্যাকসিন আসে। কৃষকেরা যদি নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে কিনে বছরে একবার গরুকে ভ্যাকসিন দেয় তাহলে এ রোগ প্রতিরোধ সম্ভব হবে। খানারী ও কৃষকরা নিরাপদে থাকবে।
আক্রান্ত গরুর সুচিকিৎসার উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তরে দ্রুত যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।’