শেখ হাসিনার পদত্যাগই যখন একমাত্র দাবি তাহলে সংলাপ কেন: ইনু
ঢাকা অফিস।।১৬ অক্টোবর, ২৩ ইং।।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি বলেছেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগই যখন বিএনপি-জামাত ও তাদের রাজনৈতিক অংশীদারদের একমাত্র দাবি- তাহলে সংলাপ কেন? ‘বিচার মানি কিন্তু তাল গাছটা আমার’Ñ এই রাজনৈতিক অবস্থানে থেকে সংলাপের কথাও ষড়যন্ত্রমূলক। জনাব ইনু বলেন, বিএনপি-জামাত ও তাদের রাজনৈতিক অংশীদারদের আসল চাওয়া নির্বাচন নয়, তারা জল ঘোলা করে দেশকে সংবিধানের বাইরে ঠেলে দিয়ে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নামে বিএনপি-জামাতের ছদ্মবেশী সরকার আনতে চাইছে। জনাব ইনু বলেন, সামরিক সরকার, অসাংবিধানিক সরকার দেশের ক্ষতি করা ছাড়া ভালো কিছু করতে পারেনা, তা অতীতে বারবার প্রমাণিত হয়েছে। সুতরাং সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো বিকল্প নাই। যারা নির্বাচন বাঁধাগ্রস্থ করার অসাংবিধানিক অগণতান্ত্রিক রাজনীতি করবে তাদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করে সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে সাহায্য করা দেশের সকল গণতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক শক্তির জাতীয় কর্তব্য। জনাব ইনু বলেন, যারা অতীতে স্বাভাবিক-গণতান্ত্রিক-সাংবিধানিক রাজনীতির পথ পরিত্যাগ করে অগণতান্ত্রিক-অসাংবিধানিক-অস্বাভাবিক রাজনীতির পথে গিয়েছিলো, যারা আগুনসন্ত্রাস-নাশকতা-সহিংসতা-অন্তর্ঘাতকে রাজনীতির কৌশল হিসাবে নিয়েছিল তাদের উচিৎ তওবা করে, জনগণের কাছে মাফ চেয়ে স্বাভাবিক-গণতান্ত্রিক-সাংবিধানিক রাজনীতিতে ফিরে আসা, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা। জনাব ইনু বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন, বিদেশী শক্তির গায়েবী হস্তক্ষেপের আশায় দিনের পর দিন পার করলেও কোনো লাভ হবে না, সে আশায় গুড়ে বালি হবে। জনাব ইনু বলেন, স্বাভাবিক রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করা। নির্বাচন যত প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে, নির্বাচন ততই ভালো ও সুষ্ঠু হবে। জনাব ইনু বলেন, নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্রের রাজনীতির সাথে মিলিয়ে বাজার সিন্ডিকেট নিত্যপণ্যের বাজারকে অস্থিতিশীল করতে উফেপরে লেগেছে। তিনি বাজার সিন্ডিকেটকে কঠোর হস্তে দমন করে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। জনাব হাসানুল হক ইনু এমপি ফিলিস্তিনের গাজায় নারী-শিশুসহ নিরপরাধ ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলিদের বর্বর হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংসযজ্ঞের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জনান। তিনি বলেন, বছরের পর বছর ধরে ইসরায়েলী বর্বরতা সমর্থন দেয়ার মধ্য দিয়ে এটাই প্রমাণিত হয়েছে আমেরিকাসহ পশ্চিমা বিশ্বের মুখে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের বাণী মানায় না। আমেরিকাসহ পশ্চিমা বিশ্ব নিজেদের লাভ-লোভ-স্বার্থ ছাড়া এক পাও দেয় না। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনি ভূমি ফিলিস্তিনিদের ফিরিয়ে দেয়া বা ফিলিস্তিনের দখলকৃত ভূমি থেকে ইসরায়েলিদের বিতারণ করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই মধ্যপ্রাচ্য সংকট সমাধানের একমাত্র পথ। আজ ১৬ অক্টোবর ২০২৩, সোমবার, বিকাল ৪ টায়, তোপখানা রোডস্থ বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাসদের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাসদের সভাপতি হাজী ইদ্রিস বেপারীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এড. মুহিবুর রহমান মিহিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাসদের সমন্বয়ক ও জাসদের সহ-সভাপতি মীর হোসাইন আখতার। বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তর জাসদের সভাপতি ও জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা শফি উদ্দিন মোল্লা, জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন, জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক নইমুল আহসান জুয়েল, জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চুন্নু, ঢাকা মহানগর পশ্চিম জাসদের সভাপতি ও জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ নুরুন্নবী, জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশ এর সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, জাতীয় যুব জোটের সভাপতি শরিফুল কবির স্বপন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাশিদুল হক ননী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাসদের সহ-সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহম্মেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আবুল আলেম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাসদের নেতা কামাল হোসেন প্রমূখ।
সম্মেলনে সর্বসম্মতিক্রমে মোঃ ইদ্রিস বেপারীকে সভাপতি ও সোহেল আহম্মেদকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাসদের কমিটি ঘোষণা করা হয়।