ধনী ও সামর্থ্যবানদের করের জালে আনুনঃ ইনু
ঢাকা অফিস।। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের উদ্যোগে আজ ৯ জুন ২০২৪, রবিবার, সকাল ১০ টায়, জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে ২০২৪—২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট পর্যালোচনা সভা করে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। পর্যালোচনা বিষয়বস্তু উপস্থাপন করেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এবং সভা সঞ্চালনা করেন জাসদের দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন।
জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, মানুষের বয়স যেমন বাড়ে বছর বছর বাজেটের আকারও তেমন বাড়ছে—তাই বাজেটের আকার বাড়ায় কৃতিত্ব নেই তাই এবারের বাজেট গতানুগতিক বাজেট। তিনি বলেন, দাগী ঋণখেলাপিদের বিশেষ ট্রাইবুনালে নিয়ে তড়িঘড়ি করে খেলাপী ঋন আদায়ের ব্যবস্থা নিতে হবে। জনাব ইনু বলেন, উপজেলায় রাজস্ব অফিস স্থাপন করে ইউনিয়নের গ্রোথ সেন্টার, ইউনিয়নের স্থায়ী দোকানদার বা ব্যবসায়ীদের কর জালে এনে লাখো কোটি টাকা রাজস্ব বাড়ানো সম্ভব। তিনি আরও বলেন, চলমান অর্থনৈতিক সংকটের যে ধাক্কায় আমরা বিপর্যস্ত এবং বাজারে নিত্যপণ্যের উচ্চ মূল্য ডলার সংকট, সুদের হারের গন্ডগোল, ব্যাংকের বিশৃঙ্খলা, রাজস্ব আনয়নে ধীরগতি এবং সমগ্র অর্থনীতিতে যে অনাস্থা ভাব ও অর্থনীতিতে যেশাসন প্রক্রিয়ার অনুপস্থিতি পরিলক্ষিত হচ্ছে, সবকিছু মিলিয়ে একটা অর্থনৈতিক সংকট সময় পার করছি। এসব ধাক্কা সামলানোর বাজেট আমরা আশা করেছিলাম। এই বাজেটে অর্থমন্ত্রী সব সমস্যা চিহ্নিত করেছেন। কিন্তু এর কোনও সমাধান নেই। বাজেটে বরাদ্দের হেরফের আছে কিন্তু ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টের জন্য ক্রাইসিস স্টেপ নেই। তিনি বলেন, আধুনিক অর্থনীতির সঙ্গে তালেবানী শাসন চাওয়ার রাজনীতি চলেনা। বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে তালেবানী মিছিল বন্ধ করতে হবে।
পলিসি ডায়ালগের পরিচালক ড. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, এখন আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলের অনেক মুদি দোকানেও বছরে কোটি টাকার লেনদেন হয়। তাই আমাদের এখন উপজেলা পর্যায়ের কর অফিসগুলো নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন এসেছে। তিনি বলেন, বাজার ব্যবস্থার সংশোধন ছাড়া মূল্যস্ফীতি কমানো সম্ভব হবে না। তাই আমাদের বাজার নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য আরও ব্যয় বাড়ানো প্রয়োজন।
এ সময় লিখিত বক্তব্যে জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট সাধারণ মানুষের কাছে বাজেট মানে আতঙ্ক। সাধারণ মানুষ কোন জিনিসের দাম কতটুকু বাড়বে, তাদের জীবনযাপন ব্যয় কতটুকু বাড়বে, এগুলো নিয়ে চিন্তিত। তিনি প্রবন্ধে, ব্যক্তিমালিকানাধীন বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে উৎপাদন হোক বা না হোক, ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়ার চুক্তি সংশোধন করে ‘নো প্রোডাকশন নো চার্জ’ চুক্তি করা, দুর্নীতি ও অর্থ পাচার রোধ করা, সামাজিক সুরক্ষা বাস্তবায়ন, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও সম্প্রসারণে জিডিপির ২ শতাংশ ও জাতীয় বাজেটের ৮ শতাংশ বরাদ্দ এবং মোবাইল ফোনের টকটাইম—ইন্টারনেট ডাটার ওপর শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান।